মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৯ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সদ্য সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে এক আসামির কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা গ্রহণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটি এই কথা জানায়।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এক আসামির সঙ্গে তুরিন আফরোজের বৈঠকের বিষয়ে সংগঠনের তদন্ত কমিটির অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয় সম্মেলনে। এ প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, তুরিন আফরোজ যেহেতু নির্মূল কমিটির সদস্য, তাই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি এএএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি নিজামুল হক ছিলেন। এটি তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। দু’টি বিষয় চিহ্নিত করে কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে।
তদন্ত করে তারা বলেছেন, তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে আসামির কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা গ্রহণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে আসামির সঙ্গে তার বৈঠকের সত্যতা মিলেছে। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের অনুমতি ছাড়াই তুরিন আফরোজ সাক্ষৎ করে ‘ভুল’ করেছেন।
শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, তুরিন আফরোজ দীর্ঘদিন ধরে নির্মূল কমিটির সঙ্গে আছেন। বর্তমানে রোহিঙ্গাদের বিচারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি এটি অব্যাহত রাখবেন।
এদিকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় ‘জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন’ গঠনের বিষয়ে খসড়া চূড়ান্ত করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এতে কমিশন গঠনের পাশাপাশি এর কার্যপরিধি ও জনবল কাঠামো তুলে ধরা হয়েছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবে সংগঠনের সংবাদ সম্মেলনে এই খসড়া প্রকাশ করা হয়।
ৎনির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন থেকেও সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের জন্য জোর দাবি উঠেছে। এ জন্য নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে কমিশন গঠনের বিষয়ে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই জাতীয় আইন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়ে ওই খসড়া পেশ করা হবে। খসড়াটি উপস্থাপন করেন সংগঠনের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। তিনিই খসড়াটি প্রণয়ন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নির্মূল কমিটির নেতা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ, অ্যাডভোকেট মকবুল-ই-ইলাহী, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল উপস্থিত ছিলেন।
সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে শাহরিয়ার কবির বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থাকা সত্ত্বেও সংবিধান এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষার জন্য প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু কমিশন রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে মানবাধিকার আন্দোলনের অন্যতম স্লোগান- ‘সংখ্যালঘুর অধিকার হচ্ছে মানবাধিকার।’
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের কমিশন সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে তৎপর হবে।
বিচারপতি এএইচএম শাসসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেশে অনেকগুলো কমিশন রয়েছে। তবে এই কমিশন হতে হবে অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ফলপ্রসূ, যা অমুসলিমদের বিরুদ্ধে সংগঠিত সকল বৈষম্য ও অপরাধের ক্ষেত্রে সফল ও কার্যকরপন্থা গ্রহণ করবে।